ভাল্লুক
বাংলাদেশে তিন প্রজাতির ভালুক আছে। এগুলি হচ্ছে কাল ভালুক (Selenarctos thibetanus), শ্লথ ভালুক (melursus ursinus)এবং মালয়ান ভালুক (Helaratos malayamis)। কাল ভালুক সাধারনত কাল ও বাদামী রং মেশানো আর শ্লথ ভালুক দেখতে মিশমিশে কালো। মালয়ান ভালুক বেশ বিরল। সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে প্রচুর ভালুক আছে। একটি কাল ভালুক ২০০ কেজি পর্যন্ত ওজনের হয়ে থাকে। ভূমি থেকে কাঁধের উচ্চতা প্রায় তিনফুট, দৈর্ঘ্য প্রায় ছয়ফুট। তবে Male ভালুক Female ভালুকের চেয়ে ওজনে অনেক ভারী হয়। এদের বুকে অর্ধচন্দ্রের মত একটি সাদা দাগ রয়েছে। সব ভালুকই পিঁপড়া, উঁইপোকা এবং মৌমাছি খেতে পছন্দ করে। বেশী ক্ষুধার্ত ভালুক মরা যে কোন প্রাণিই খেতে পারে। বিভিন্ন গাছের ফল ওদের খুবই প্রিয়। মাঝে পাহাড়ি নালা/ছড়া থেকে মাঝে মাছও খেয়ে থাকে।ভালুক নিশাচর প্রাণি। তবে মানুষর উপদ্রবহীন জায়গা অথবা গভীর বনে দিনেও খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। সাধারণত গোধুলীর সাথে সাথে ভালুক খাবারে খেতে বের হয়। সারা রাত ধরে খাদ্যের সন্ধানে ঘুরে বেড়াবে আর ভোর হলে কোন গুহা বা পাথরের ফাঁকে গা এলিয়ে দিয়ে আরাম করে ঘুমাবে।
পারতপক্ষে ভালুক মানুষ মারে না। তবে কখনো মানুষ যদি আচমকা ওদের সামনা সামনি হয়ে পড়ে তখন নিজে আক্রান্ত হ্ওরয়ার ভয়ে মানুষকে আক্রমণ করে। মানুষের শরীর ছিন্ন ভিন্ন করে দেয় ভালুকের ধারালো নখের আঘাতে আঘাতে। ভালুক কানে কম শুনে আর দিনের বেলায় চোখে কম দেখে। তবে ভালুকের শ্রবণশক্তি অত্যন্ত প্রখর। শীতের শেষে মা ভালুক একটি বাচ্চা প্রসব করে। কোন ঘন জংগলে, গুহায় অথবা গাছের বড় ফোকরে বাচ্চা লুকিয়ে রাখে। বাচ্চা একটু বড় হলেই মা ভালুক বাচ্চাকে সাথে নিয়ে বনে ঘুরে বেড়ায়। বাচ্চাসহ মা ভালুক মানুষের সামনে পড়া মাত্রই আক্রমণ নিশ্চিত। ভালুক খুব ভাল গাছে চড়তে পারে। সুতরাং গভীর বনে হাটার সময় খুব সাবধান। ভালুক অনেক ক্ষেত্রে মানুষের বন্ধুও হতে পারে। কিন্তু বন্য ভালুকগুলো? এগুলো এতটাই বিপজ্জনক যে, ভয়ঙ্কর প্রাণীর তালিকার মধ্যে এদের স্থান ১০ম। ভালুক দ্বারা বছরে প্রায় ৫-১০টি দুর্ঘটনা ঘটে।
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment