ইসথমহায়লা রিভুলারিস
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও বনভূমি উজাড় হওয়ায় দিন দিন নানা বন্যপ্রাণী ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিপন্ন অবস্থায় পৌঁছে গেছে হাজার হাজার প্রাণী যা প্রাণিবিজ্ঞানী ও সংরক্ষণবাদীদের রীতিমতো ভাবিয়ে তুলেছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আরো বহুপ্রাণীই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তবে এরই মধ্যে একদল বিজ্ঞানী শুনিয়েছেন আশার কথা। তারা জানিয়েছেন, ২০ বছর ধরে অনুসন্ধানের পর তারা এই প্রথম কোস্টারিকার একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিরল প্রজাতির একটি স্ত্রী ব্যাঙ দেখতে পেয়েছেন। আজ থেকে দুই দশক আগে ধারণা করা হয়েছিল এ জাতীয় গেছো ব্যাঙ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার-এর একদল গবেষক গত বছর একই বনে ‘ইসথমহায়লা রিভুলারিস’ বৈজ্ঞানিক নামের একটি পুরুষ গেছো ব্যাঙ দেখতে পান। তখন তারা স্ত্রী জাতীয় এক প্রজাতির ব্যাঙের জন্য পুরো অঞ্চল চষে বেড়ালেও তার দেখা পাননি। সম্প্রতি এক রাতে গবেষকদল ফের বন-বাদাড়ে অনুসন্ধান চালালে আড়াই সেন্টিমিটার (১ ইঞ্চি) লম্বা এবং বাদামি ও হালকা সবুজের মিশ্রণে রঙিন ক্ষুদ্র একটি স্ত্রী গেছো ব্যাঙ দেখতে পান।
গবেষকদলের প্রধান ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার-এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ম্যানেচেস্টার মিউজিয়াম-এর প্রাণী বিশেষজ্ঞ আন্দ্রে গ্রে বলেন, ঘটনাটি তার পেশাগত জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। তার মতে, একই প্রজাতির স্ত্রী ও পুরুষ জাতীয় ব্যাঙের সন্ধান পাওয়ায় প্রজননের মাধ্যমে এ জাতীয় ব্যাঙের বংশ বিস্তার সম্ভব হবে। একই সঙ্গে জানা যাবে কোন ধরনের প্রতিবেশ এ ধরনের ব্যাঙ পছন্দ করে। এদের সংখ্যা কমে যাবার কারণও পরিষ্কার হয়ে যাবে নিবিড় গবেষণার মাধ্যমে। গবেষকদের ভাষায়, ক্ষুদ্রাকৃতির এ জাতীয় স্ত্রী ব্যাঙের সন্ধান পাওয়া খুবই কঠিন। কারণ পুরুষ ব্যাঙ মাঝে-মধ্যে স্বভাবজাত শব্দ করে ডাকাডাকি করলেও স্ত্রী ব্যাঙ অধিকাংশ সময় থাকে নীরব। তাছাড়া দিনের বেলায় এ জাতীয় ব্যাঙ গাছের কোটরে কিংবা পাতার ফাঁকে লুকিয়ে থাকে। কেবল অপেক্ষাকৃত আরো ক্ষুদ্রাকৃতির পোকা-মাকড় আহারের আশায় রাতের বেলায় বের হয়। তাই এদের দেখা মেলেও কেবল রাতেই। আন্দ্রে গ্রে বলেন, গত বছর পুরুষ ব্যাঙ পেলেও স্ত্রী ব্যাঙের সন্ধান পাবো এটা ছিল কল্পনাতীত। এবার স্ত্রী ব্যাঙের সন্ধান পাওয়ায় এ প্রজাতির প্রজননের ব্যবস্থা করা যাবে। হয়তো অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে এ প্রজাতির ব্যাঙের সংখ্যা বেড়ে যাবে। তাছাড়া বিরুদ্ধে পরিবেশ সনাক্ত করা গেলে ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনাও প্রণয়ন করা সহজ হবে।
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment