Animals Life in Bengali Description

ম্যামথ

No comments
লোমশ হাতি বা ম্যামথের অস্তিত্ব এখন আর পৃথিবীতে নেই। এই প্রাণীটিকে হাতির আদিরুপ মনে করা হয়। খ্রিস্ট জন্মের মোটামুটি পাঁচ থেকে দশ হাজার বছর আগে এরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এক সময় উত্তর আমেরিকা ও ইউরেশিয়ার উত্তরাংশ এবং সাইবেরিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চল দাপিয়ে বেড়াত এই বিশাল প্রাণীটি। এটি আকারে হাতির চেয়ে বড় ছিল। এর দাত ছিল বিশাল। শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রায়ও টিকে থাকার ক্ষমতা ছিল এদের। শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রায় কীভাবে অতিকায় এই প্রাণীটি টিকে থাকত, এতদিন ধরে এটা একটা প্রশ্ন হয়েই ঝুলেছিল বিজ্ঞানীদের সামনে। সম্প্রতি তারা এই প্রশ্নের জবাব খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সূত্র বিবিসি।
তারা বলেছেন, ম্যামথের রক্তে এমন একটি এন্টি-ফ্রিজিং বা ঠাণ্ডানিরোধী উপাদান ছিল, যা তাদের শূন্য ডিগ্রিরও নিচের তাপমাত্রার প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় টিকে থাকতে সহায়তা করত। ‘নেচার জেনেটিকস’ নামের একটি সাময়িকীতে তারা লিখেছেন, ওটা ছিল এক ধরনের ব্লাড প্রোটিন, লাল রক্তকণিকা—যাকে বলা যায় হিমোগেম্লাবিন। এই হিমোগ্লোবিনই তাদের রক্তে অক্সিজেন বহন করত। এটা ছিল তাদের জিনে বয়ে নিয়ে আসা অভিযোজন বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই তারা শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রায় টিকে থাকতে পারত। হিমোগ্লোবিন তাদের শরীরের ভিতরের তাপমাত্রাকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সাহায্য করত।
 অতিরিক্ত ঠাণ্ডা সাধারণত রক্তনালীতে হিমোগ্লোবিনের অক্সিজেন সরবরাহে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ার ভূগর্ভস্থ চির হিমায়িত অঞ্চলে সংরক্ষিত তিনটি ম্যামথের ফসিল থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করেন। তারপর ওগুলো থেকে হিমোগ্লোবিন জিনগুলো বিন্যস্ত করেন। পরে আরএনএ বের করা হয়। আরএনএ থেকে ওগুলোকে সন্নিবেশিত করা হয় ই-কোলি নামের ব্যাকটেরিয়ায়। আর এই ব্যাকটেরিয়াগুলোই সার্থকভাবে তৈরি করে ম্যামথের রক্তের প্রোটিন বা হিমোগ্লোবিন।
এরপর বিজ্ঞানীরা ম্যামথের রিভাইভড বা ‘পুনরুজ্জীবিত প্রোটিনগুলো পরীক্ষা করেন এবং তাতে হিমোগ্লোবিনের তিনটি স্বতন্ত্র পরিবর্তন আবিষ্কার করেন, যা ম্যামথের রক্তে অক্সিজেন সঞ্চালিত করে প্রাণীটিকে চরম ঠাণ্ডায়ও স্বচ্ছন্দে টিকে থাকার শক্তি জোগাত।
গবেষক দলের প্রধান ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডিলেডের অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর অ্যানসিয়েন্ট ডিএনএ-র প্রফেসর অ্যালান কুপার বলেন, ‘একটি বিলুপ্ত প্রজাতির ডিএনএ পুনরুজ্জীবিত করার কাজটা অত্যন্ত জটিল ব্যাপার। তবে আমরা কাজটা করতে পেরেছি।’এই প্রাণী ছিল শাকাসী।

No comments :

Post a Comment