চিতা বিড়াল
একসময় গাছপালাসমৃদ্ধ গ্রামের ঝোপ-জঙ্গলে দেখা গেলেও এখন সংখ্যায় অনেক কমে গেছে। কেবল দেশের বনাঞ্চলে এই চিতা বিড়ালের (Prionailurus bengalensis) সংখ্যা কিছুটা ভালো। ২০০৭ সালে বিড়ালটিকে লাউয়াছড়া বনে দেখি। এ বছরের প্রথম দিকে লাউয়াছড়া অরণ্যে আবার চিতা বিড়ালের দেখা মিলল। দুপুরের দিকে বিড়ালটি বনের তিন ঘণ্টার ট্রেইলের শেষের দিকে হাঁটাহাঁটি করছিল। স্বভাবে এরা নিশাচর হলেও কখনো কখনো দিনের বেলায় বের হয়। বিশেষ করে নির্জন বনের ছায়ায় কোনো ফাঁকা জায়গায় চোখে পড়ে।আয়তনে আমাদের পোষা বিড়ালের মতো হলেও পা অনেক লম্বা। পুরো গায়ের রং হলদে, তাতে কালো রঙের অনিয়মিত ছোপ। দেহের নিচের অংশ সাদাটে এবং কালো ও হালকা বাদামি ফোঁটা আছে। দৈর্ঘ্য ৬৬ সেন্টিমিটার। লেজের দৈর্ঘ্য ২৯ সেন্টিমিটার। প্রাপ্তবয়স্ক বিড়ালের ওজন তিন-চার কেজি হয়। গ্রামের লোকজন এ বিড়ালকে চিতা বাঘের ছানা বলে ভুল করে এবং চোখে পড়লে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
প্রজনন সময় ছাড়া এ বিড়াল একাকী চলাফেরা করে। বড় পোকামাকড়, ছোট মেরুদণ্ডী প্রাণী, ছোট পাখি, খরগোশ, লিজার্ড, কাঁকড়া ও মাছ ধরে খায়। সুযোগ পেলে বসতবাড়ির হাঁস-মুরগিও শিকার করে।
গাছপালায় আচ্ছাদিত ঘন বন এদের প্রিয় আবাস। বাংলাদেশ বাদে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চীন, রাশিয়া, হিমালয়ের পাদদেশ, জাভা, সুমাত্রা, তাইওয়ান, জাপান ও ফিলিপাইনে চিতা বিড়াল দেখা যায়।
বসতি ধ্বংস এবং চামড়ার জন্য শিকারের কারণে দেশ থেকে দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে প্রাণীটি।
-সৌরভ মাহমুদ | প্রথম আলো
Related Posts
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment