সাসকুয়াস
বড় বিচিত্র এ বিশ্ব। এখানে এখনো এমন সব প্রাণী রয়েছে, যাদের অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। তেমনি একটি প্রাণীর নাম বিগফুট (Bigfoot), অনেকে এদের সাসকুয়াস প্রাণী বলে অভিহিত করে। লোমযুক্ত এই প্রাণীর উচ্চতা ৮ থেকে ১০ ফুট। আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে বিগফুটের অস্তিত্ব যুক্তরাজ্য, কানাডা, রকি পর্বতমালায় ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। দক্ষিণ আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের নতুন অধিবাসীরা বিগফুটকে মানবজাতির বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি মনে করলেও এ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশাল দেহের অধিকারী এই প্রাণীর বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। যে প্রজাতিগুলো আজ থেকে হাজার বছর আগে রকি পর্বতমালা বা তার আশপাশের এলাকায় ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। হেনরি নিউম্যান নামক একজন বিজ্ঞানী ১৯২১ সালে হিমালয় পর্বতে বিগফুট ও মাসকুয়াসের আলাদা জীবাশ্ম খুঁজে পান। তিনি জীবাশ্মের মাধ্যমে বিগফুটও সাসকুয়াসের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য আছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। বিগফুট নিয়ে বিতর্ক থাকলেও অধিকাংশ বিজ্ঞানী মনের করেন, বিগফুট ও ইয়াটি সমজাতীয় প্রাণী। এর মধ্যে একটি অন্তর্নিহিত সম্পর্ক বিরাজমান। সাসকুয়াস একটি আমেরিকান প্রাণী। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মতবাদ প্রকাশিত হলেও এর অস্তিত্ব চীন, রাশিয়া, মালয়েশিয়া, হাওয়াই ও অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে বলে বিভিন্ন মনীষী তাদের তত্ত্ব প্রকাশ করেন। তবে মজার ব্যাপার হলো, গুপ্ত প্রাণিবিজ্ঞানী ও জীববিজ্ঞানীরা বিগফুটের অস্তিত্ব সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। গুপ্ত প্রাণি বিজ্ঞানীরা বিগফুটের অস্তিত্বকে অস্বীকার করলেও অন্য বিজ্ঞানীরা এর অস্তিত্বকে অস্বীকার করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে বিগফুট ছিল এবং আছে, এদের উচ্চতা ৭ থেকে ১০ ফুট। বা ২ থেকে ৩ মিটার। গরিলা ও শিম্পাঞ্জির মতো দেখতে মনে হলেও এদের শরীরে রয়েছে মানুষের শরীরের মতো লোম। এরা মানুষের মতোই লেজবিহীন। তবে দেখতে বানর বা উল্লুকের মতোও মনে হতে পারে। বিগফুটের চুল এলোমেলো, রুক্ষ, শরীর মোটা, অপরিপাটি, উষ্কখুষ্ক ধরনের আজব প্রাণী। বিগফুটদের গায়ের রং বিভিন্ন ধরনের। যেমন : লাল, রুপালি, ধূসর বালুময়, বৃহৎ নয়ন ও প্রগাঢ় ভ্রু। সাসকুয়াস মূলত আমেরিকান মনীষারা ব্যবহার করে। আর ইন্ডিয়ানরা সাসকুয়াসেকেই বিগফুট বলে সম্বোধন করে। সম্প্রতি আমেরিকার একদল নিজস্ব তরুণ ও উদ্যমী গবেষক বিগফুট নিয়ে গবেষণা করে এই তথ্য প্রকাশ করে যে, ১৫০০ খ্রিস্টপূর্ব অব্দে ও ২০০ খ্রিস্টপূর্ব এই সময়ের মাঝামাঝি বিগফুটের অস্তিত্ব পৃথিবীতে ছিল। বর্তমানেও থাকতে পারে বলে তারা মন্তব্য করেন। বিগফুট নিয়ে শত শত গবেষক ও বিজ্ঞানী রাতদিন গবেষণা করলেও এই প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়ে সর্বজন গ্রহণযোগ্য কোনো তত্ত্বই তারা উপস্থাপন করতে পারেননি। বিগফুট নিয়ে এখনো পৃথিবীর হাজার হাজার মানুষের মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট রহস্য ও কৌতূহল। বিগফুট নিয়ে বিভিন্ন বই, উপন্যাস প্রকাশিত হলেও কোনো লেখকই এই রহসম্যময় জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাতে পারেননি। অদূর ভবিষ্যতে বিজ্ঞানীরা এই অদ্ভুত প্রাণীর অস্তিত্বের সঠিক প্রমাণ দিতে পারবেন কি-না বা বিগফুটের অস্তিত্ব আজীবন ঘোরের মধ্যেই থেকে যাবে কিনা, সেটাই দেখার বিষয়!- রিয়াজুল ইসলাম
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment