গরগন
প্রাগৈতিহাসিক যুগের বিশাল প্রাণী ডাইনোসর। কিন্তু আকারে তার চেয়েও বড় আরেক প্রাণীর নাম গরগন। এদের মাথা ছিল কুমিরের মতো। আর শরীর সিংহ আকৃতির। আবার অনেকের মতে মাথা ছিল সিংহের মতো আর শরীর ছিল কুমিরের মতো।সে সময় গরগনরাই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে হিংস প্রাণী। ২৫ কোটি বছর আগে এরা দোর্দণ্ড প্রতাপে পৃথিবীতে বিচরণ করেছে। ডাইনোসর যুগ এর ৫ কোটি বছর পর শুরু হয়। বিজ্ঞানীরা গরগনদের 'খেরাপ- সাইড' প্রজাতির দলভুক্ত করেছেন। এসব প্রাণীর বৈশিষ্ট্যই ছিল অর্ধেক স্তন্যপায়ী এবং অর্ধেক সরীসৃপের মতো।
প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীদের মধ্যে গরগন হলো সবচেয়ে লম্বা, ভয়ঙ্কর এক পৌরাণিক প্রাণী। বিজ্ঞানীরা চীন, রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় গরগনের কঙ্কালের অংশবিশেষ খুঁজে পেয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন জাদুঘরের বিজ্ঞানী ও গরগন বিশেষজ্ঞ ড. রজার স্মিথের মতে, গরগনদের শিকারের কৌশল ছিল বিড়ালের মতো। তারা গুটিসুটি মেরে ওঁৎ পেতে শিকারের জন্য অপেক্ষা করত। শিকার কাছে এলে ঝাঁপিয়ে পড়ে থাবা দিয়ে আঁকড়ে ধরত। কুকুরের মতো তীক্ষ্ন ধারাল দাঁত দিয়ে কামড়ে কামড়ে মেরে ফেলত। ২৫ কোটি বছর আগে পৃথিবীর শতকরা ৯০ ভাগ প্রাণী বিলুপ্তির যে মড়ক হয়েছিল তার শুরুতেই গরগনদের বিলোপ ঘটে। যদি বিজ্ঞানীরা গরগনদের মৃত্যুর কারণ চিহ্নিত করতে পারেন, তা হলে পৃথিবীজুড়ে কেন অমন মড়ক লেগেছিল তা জানা সহজ হবে। এখনো আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, খরা এবং ভূমিকম্প এ তিনটিকে এদের বিলুপ্তির কারণ হিসেবে দেখা হয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, গরগনরা বংশপরম্পরায় টিকে থেকেছে এবং মানুষসহ স্তন্যপায়ীদের উত্থানে সহায়তা করেছে। ড. স্মিথ বলেছেন, 'যদি গরগনদের পূর্ণাঙ্গ ফসিল আমরা খুঁজে পাই তা হলে মানুষ এবং বর্তমান প্রাণীকুল কোথা থেকে এসেছে সেটাও জানতে পারব'।
Related Posts
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment